Wednesday 26 April 2017

চাল কিনতে গিয়ে চার বছর পর বাড়ি ফিরল শিশু!

চাল কিনতে গিয়ে চার বছর পর বাড়ি ফিরল শিশু!

Copy by Md Abdur Rob


চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৫ এপ্রিল ২০১৭,

ক্ষুধায় কাতর ছিল পুরো পরিবার। রান্নার জন্য ছয় বছর বয়সী ইনামুলকে বাজারে চাল আনতে
পাঠিয়েছিলেন মা সাজু খাতুন। মায়ের কথামতো চাল আনতে গিয়ে দালালদের খপ্পরে পড়ে পাচার হয়ে যায় ভারতে।

চার বছর পর ভারতের সেফ হোম থেকে ফিরে আসে পাবনার চাটমোহর উপজেলার ফৈলজানা ইউনিয়নের কদমতলী গ্রামের সিহাব উদ্দিনের ছেলে ইনামুল হক। পরে পরিবারকে পুনর্বাসন করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেহেলী লায়লা।

চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেগম শেহেলী লায়লা মঙ্গলবার তার দফতরে ইনামুল ও তার মা-বাবাকে নিয়ে আসেন। ফৈলজানা ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয় সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে ইউএনও শেহেলী লায়লা একটি ভিজিডির কার্ড তুলে দেন এনামুলের মা সাজু বেগমের হাতে।

এনামুলের বাবা সিহাব উদ্দিনকে নিয়োগ করেন সরকারে অতি দরিদ্রদের জন্য ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচির শ্রমিক হিসেবে। একই সঙ্গে সদস্য করা হয় একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের। এজন্য বার্ষিক সঞ্চয়ের ২ হাজার ৪শ’ টাকা জমা দেন ইউএনও নিজেই।

আগামী জুলাই মাসে সিহাবকে ঋণ দেয়া হবে ৩০ হাজার টাকা। এছাড়া সরকারের প্রকল্প হিসেবে প্রদান করা হবে বাড়ি করার জন্য জমি ও ঘর।

এছাড়া ইনামুলকে ভর্তি করানো হয় স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। শর্ত ইনামুল কোনোভাবেই পড়া-লেখা বাদ দিতে পারবে না। ছেলের লেখা-পড়া বন্ধ করানো হলে সরকারের সকল সহায়তা বন্ধ করে দেয়া হবে।

নতুনভাবে বাঁচার আশা খুঁজে পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে ওঠে ইনামুল ও তার পরিবার এবং উপস্থিত সবাই।

ইউএনও বেগম শেহেলী লায়লা যুগান্তরকে বলেন, ছেলেটি (ইনামুল) অত্যন্ত মেধাবী। আমি তার সঙ্গে কথা বলেছি। মানুষ চাইলে মানুষের উপকারে আসতে পারে। পুরোটাই ইচ্ছাশক্তির ওপর নির্ভর করে।

উল্লেখ্য, ৪ বছর আগে ৮ বছরের শিশু ইনামুল হক বেরিয়েছিল চালের খোঁজে। স্টেশনে গিয়ে ট্রেন দেখে ভুলে গিয়েছিল ক্ষুধার কথা। খেলার ছলে উঠে পড়েছিল সেই ট্রেনে। দালালের খপ্পরে পড়ে পাচার হয়েছিল ভারতে।

সীমান্তে ভারতীয় পুলিশ তাকে আটক করে। ছেলেটির আশ্রয় মেলে শিলিগুড়ির একটি সেফ হোমে। এরপর সেখানেই কেটে যায় চার বছর। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেষ্টায় খোঁজ মেলে ইনামুলের।

পরিচয় মিলতেই ভারতীয় সেফ হোম কর্তৃপক্ষ তাকে বাংলাদেশে পাঠায়। গত ৩১ মার্চ মায়ের কাছে ফিরে আসে সে।

No comments:

Post a Comment